গান

জয় বাংলা কনসার্ট বয়কট করলো ক্রিপটিক ফেইট

কদিন ধরে কোটা সংস্কার আন্দোলন ও পরবর্তী সহিংসতায় থমকে আছে সারাদেশ। এই পরিস্থিতিতে সাধারণ মানুষের পাশাপাশি সরব দেশের শোবিজ অঙ্গনের মানুষেরাও। আন্দোলন ঘিরে সংঘাত-সহিংসতায় নিহত ও গ্রেপ্তার-হয়রানির ঘটনায় প্রতিবাদ জানাচ্ছেন তারা। এরই মধ্যে দেশের অন্যতম জনপ্রিয় ব্যান্ড ক্রিপটিক ফেইট ঘোষণা দিয়েছে, জয় বাংলা কনসার্ট করবে না তারা। গতকাল রাতে ক্রিপটিক ফেইট তাদের ফেসবুক পেজে একটি পোস্ট দিয়ে এ কথা জানায়। সেখানে তারা জানান, অনেকেই প্রশ্ন করছেন আপনারা জয় বাংলা কনসার্ট করবেন? যেই ব্যান্ড দেশপ্রেম, মুক্তিযুদ্ধ, অন্যায়, অবিচার নিয়ে গান করে, সে কীভাবে এখন চিন্তা করে যে সামনের জয় বাংলা কনসার্টে বাজাবে? তাই প্রশ্নের উত্তর ‘না’। এমন পোস্টে নেট দুনিয়ায় প্রশংসায় ভাসছে ক্রিপটিক ফেইট। শিক্ষার্থীদের সঙ্গে একাত্মতা প্রকাশ করায় ভালবাসা প্রকাশ করেন তারা। তবে কেউ কেউ সমালোচনাও করেছেন। এমন ঘোষণা দিতে কেন এত বিলম্ব করল ব্যান্ডটি, তা নিয়ে তোলা হয়েছে প্রশ্ন। এর আগে সংগীত শিল্পী সিনা হাসান ‘জয় বাংলা’ কনসার্ট বয়কটের ঘোষণা দেন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে একটি পোস্ট দিয়েছিলেন। তিনি লিখেছিলেন,একজন শিল্পী হিসেবে আমি ‘জয় বাংলা’ কনসার্ট বয়কট করলাম। এই তোষামোদকারী’ছেলেভুলানো’কনসার্টে আমাকে শিল্পী বা দর্শক কোন হিসেবেই যেন কখনই ডাকা না হয়।

এস সিরিজ মাল্টিমিডিয়ার প্রযোজনায় ‘কবে তুই বুঝবিরে বল’

অনুষ্ঠিত হয়ে গেলো এস সিরিজ মাল্টিমিডিয়া এর জমকালো শুভ উদ্ধোদন এবং এস সিরিজ মাল্টিমিডিয়ার প্রযোজনায় ‘কবে তুই বুঝবিরে বল?’ মিউজিক ভিডিওর প্রিমিয়ার শো। গানটিতে কন্ঠ দিয়েছেন সোহেল রানা ও মাইশা শান্তা। সোহেল রানা মূলতঃ এস এ টিভি ও কিংবদন্তি মিডিয়া আয়োজিত ব্যাংকাস ভয়েজ রিয়েলিটি শো এর সেরা ১০ শিল্পী ও মাইশা শান্তা চ্যানেল আই সেরা কন্ঠের সেরা ১০ এর শিল্পী। গানটি সম্পর্কে সোহেল রানা বলেন – বিভিন্ন মনোরম লোকেশনে শুটিং এর জন্য গানটির কথা সম্পুর্নটাই ভিডিওতে ফুটে উঠেছে, এই সুন্দর কাজের অনুপ্রেরণা আমাকে আগামীতে সুন্দর কাজ করতে সহায়তা করবে, আশাকরি ঈদ উপলক্ষে রিলিজকৃত এই গানটি দর্শক সানন্দে গ্রহণ করবে। গানটি লিখেছেন শামীম মাহমুদ এবং সুর করেছেন ও সংগীত আয়োজন করেছেন বিশ্বজিৎ বড়ুয়া সামু। গানটি সম্পর্কে ভিডিও নির্মাতা আলী আহসান লিটন বলেন – রোমান্টিক ফিল্মি এ গানটি প্রথম শুনেই আমাকে কল্পনাতে ভাসিয়েছে, কতটুকু তুলে ধরতে পেরেছি তা দর্শকরাই বলতে পারবেন। অনুষ্ঠানে অন্যান্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিল দেশ বরেন্য সংগীত শিল্পী, গীতিকার, সুরকার, সংগীত পরিচালক, মডেল, পরিচালক, সাংবাদিকসহ মিডিয়া ব্যক্তিবর্গ।

২০ বছর পর একসঙ্গে গাইলেন শওকত আলী ইমন ও আঁখি আলমগীর

শওকত আলী ইমন ও আঁখি আলমগীর বাংলা সঙ্গীতের আকাশে জ্বলজ্বলে দুই তারা। নিজেদের মেধা, মনন আর পরিশ্রম দিয়ে সঙ্গীতের এক অনন্য উচ্চতায় অবস্থান করছেন এই দুই তারকা। কাজের স্বীকৃতিস্বরূপ দু’জনেই পেয়েছেন জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার।
আঁখি আলমগীরের কণ্ঠের জন্য শওকত আলী ইমনের সংগীত পরিচালনা মানেই অন্যরকম ধামাকা। ‘জল পড়ে পাতা নড়ে’,‘বাবুজি’,‘শ্যাম পিরিতি’ থেকে সর্বশেষ ‘রাজকুমারী’ তাদের এই গানগুলো শোনেননি; এমন শ্রোতা পাওয়া মুশকিল। এই দুই তারকা কিন্তু ডুয়েট গানও করেছিলেন। সেটা ২০ বছর আগের গল্প। সিনেমার গানে কণ্ঠ মিলিয়েছিলেন তারা।
২০ বছর পর আবার একসঙ্গে কণ্ঠ মেলালেন আঁখি আলমগীর ও শওকত আলী ইমন। প্লেব্যাকে এর আগে দুটি গান একসঙ্গে গাইলেও অডিওতে এবারই প্রথম ডুয়েট গাইলেন দু’জন।
গানের শিরোনাম ‘কফির পেয়ালা’। প্রিয় মানুষটিকে কাছে পাওয়ার আকুলতা কাব্যে সাজিয়েছেন গীতিকবি আশিক মাহমুদ। আকাশ মাহমুদের সুরে গানটির সঙ্গীতায়োজন করেছেন শওকত আলী ইমন। গানটির ভিডিও নির্মাণ করেছেন শিথিল রহমান। এতে মডেল হয়েছে আঁখি আলমগীর ও শওকত আলী ইমন নিজেরাই। গানের ভিডিওতে আঁখি ও ইমনকে দেখা যাবে একে অন্যের প্রেমের শ্রোতে ভাসছেন আবার ডুবছেন।
গানটি প্রকাশ করছে ধ্রুব মিউজিক স্টেশন (ডিএমএস)।
গানটি নিয়ে শওকত আলী ইমন বলেন, ‘আঁখির সঙ্গে আমার গানের কম্বিনেশনটা দারুণ। দুজনেই চেষ্টা করেছি ভালো একটি গান উপহার দেওয়ার। রোমান্টিক ধাঁচের এই গানটি আমার বিশ্বাস শ্রোতাদের ভালো লাগবে।’
আঁখি আলমগীর বলেন, ‘এটি আমার খুব পছন্দের একটি গান। আমি যেমনটি চেয়েছি গানটি ঠিক তেমনই হয়েছে। আমার মনের মতো আরও একটি গান বানিয়েছে ইমন। সেই সাথে কণ্ঠও দিয়েছে সে। এজন্য তাকে ধন্যবাদ। ভিডিওতে আমরা নিজেরাই পারফর্ম করেছি। আমার বিশ্বাস শ্রোতা-দর্শকরা নিরাশ হবেন না।’
ধ্রুব মিউজিক স্টেশন (ডিএমএস) জানায়, আগামী ৩১ মার্চ রবিবার তাদের ইউটিউব চ্যানলে অবমুক্ত করা হবে ‘কফির পেয়ালা’ গানটির ভিডিও। সেই সাথে গানটি শুনতে পাওয়া যাবে দেশি ও আন্তর্জাতিক একাধিক অ্যাপএ।

পঙ্কজ উদাস মারা গেছেন

গজলশিল্পী পঙ্কজ উদাস মারা গেছেন। ‘বড়ে দিনো কে বাদ…চিঠঠি আয়ি চিঠঠি আয়ি হ্যায়…’-এর সেই মনকাড়া গজলের কণ্ঠ থেমে গেল চিরদিনের মতো। আজ সোমবার পঙ্কজ উদাসের পরিবারের পক্ষ থেকে একটি বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ‘আমরা ভারাক্রান্ত হৃদয়ে আপনাদের জানাচ্ছি, পদ্মশ্রী পঙ্কজ উদাস ২০২৪-এর ২৬ ফেব্রুয়ারি প্রয়াত হয়েছেন..। গায়কের কন্যা নায়াব উদাস ইনস্টাগ্রামে দেওয়া এক পোস্টে বাবার মৃত্যুর কথা নিশ্চিত করেছেন। মুম্বাইয়ের একটি বেসরকারি হাসপাতালে বেলা ১১টা নাগাদ মৃত্যু হয় শিল্পীর। দীর্ঘদিন ধরে গায়ক নানা ধরনের অসুস্থতায় ভুগছিলেন।’

রাজকোটের কাছে অবস্থিত চারখাদি নামের একটি ছোট্ট শহরে ১৯৫১ সালের ১৭ মে পঙ্কজ উদাসের জন্ম। জমিদার পরিবারের ছেলে তিনি। বাবা কেশুভাই উদাস সরকারি চাকরিজীবী হলেও দিলরুবা বাজাতেন। ছোট থেকেই সংগীতের পরিবেশে বড় হয়ে ওঠা তাঁর। ছেলেকে রাজকোটের সংগীত একাডেমিতে ভর্তি করান পঙ্কজ উদাসের বাবা। শুরুতে তবলার তালিম নিলেও পরবর্তী সময়ে
গুলাম কাদির খান সাহেবের কাছে ভারতীয় ধ্রুপদি সংগীতের তালিম নেওয়া শুরু করেন। পরে মুম্বাইয়ে এসে গোয়ালিয়ার ঘরানার শিল্পী নবরঙ্গ নাগপুরকরের কাছে সংগীতশিক্ষা শুরু করেন। মূলত গজলের গায়ক হিসেবে তিনি ব্যাপক পরিচিতি পান। ১৯৮০ সালে ‘আহাত’ শিরোনামের গজল অ্যালবাম প্রকাশের মাধ্যমে তিনি তাঁর সংগীত দুনিয়ায় যাত্রা শুরু করেন। অল্প কিছুদিনের মধ্যেই তিনি বলিউডের সংগীতজগতে একটি উল্লেখযোগ্য নাম হয়ে ওঠেন। সঞ্জয় দত্ত অভিনীত ১৯৮৬ সালের মুক্তি পাওয়া ছবি ‘নাম’-এর ‘বড়ে দিনো কে বাদ/ হাম বে বসনে কো ইয়াদ…’ সংগীতপ্রেমী অগণিত শ্রোতাকে মুগ্ধ করেছে, এখনো এ গানের জনপ্রিয়তা আছে।

‘চিঠঠি আয়ি হ্যায়’ গানটি পঙ্কজ উদাসকে রাতারাতি সংগীতপ্রেমী উপমহাদেশীয় শ্রোতার মনে পাকাপাকি জায়গা করে দেয়। এরপর তাঁর সংগীতজীবনে একটির পর একটি গজলের অ্যালবাম প্রকাশ করেছেন। লাইভ কনসার্টে অংশ নিয়েছেন।
‘চান্দি জ্যায়সা রং’, ‘না কাজরে কি ধার’, ‘দিওয়ারো সে মিলকর রোনা’, ‘আহিস্তা’, ‘থোড়ি থোড়ি প্যায়ার করো’, ‘নিকলো না বেনাকাব’—পঙ্কজ উদাসের গাওয়া অসাধারণ সব গজল আজও শ্রোতাদের মনের রসদ। ‘নশা’, ‘পয়মানা’, ‘হসরত’, ‘হামসফর’-এর মতো বেশ কয়েকটি বিখ্যাত অ্যালবামও রয়েছে তাঁর ঝুলিতে। বাংলা ‘যায়রে চলে যায়’, ‘তুমি খাঁচা হলে আমি হব পাখি’, ‘কত স্বপ্ন দেখেছি, কত ছবি এঁকেছি’, ‘তোমার চোখেতে ধরা’ ইত্যাদি গান জনপ্রিয়তা পেয়েছে। আর সংগীতপ্রেমীদের কাছে ‘গজল কিং’ পঙ্কজ উদাস।
পঙ্কজ উদাসের পরিবারের পক্ষ থেকে এই বিবৃতি জানার পর বলিউডের দুনিয়া থেকে প্রথম প্রতিক্রিয়া জানান গায়ক সোনু নিগম। সোনু নিগম তাঁর ইনস্টাগ্রাম পোস্টে লেখেন, ‘আমার ছেলেবেলার একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায়কে আজ হারিয়ে ফেললাম…। শ্রীপঙ্কজ উদাসজি, আপনাকে আমি মিস করব সারা জীবন…। আজ আপনার প্রয়াণের খবর পেয়ে আমার হৃদয় কাঁদছে…আমাদের গানের জগতে আপনার আবির্ভাবের জন্য আপনাকে অনেক ধন্যবাদ…ওম শান্তি…।’

সংগীতজগতে অবদানের জন্য অজস্র সম্মান ও পুরস্কার পেয়েছেন প্রয়াত শিল্পী। ২০০৬ সালে ভারত সরকারের তরফে চতুর্থ সর্বোচ্চ নাগরিক পুরস্কার, পদ্মশ্রী সম্মানে ভূষিত হন গায়ক।