মঞ্চ

মঞ্চে এলো এথিক এর নতুন নাটক সৈয়দ ওয়ালীউল্লাহ্’র সুড়ঙ্গ

গত ২৩মে শুক্রবার সন্ধ্যা ৭টায় বাংলাদেশ মহিলা সমিতির ড. নীলিমা ইব্রাহিম মিলনায়তনে মঞ্চস্থ হলো ঢাকার অন্যতম নাট্যদল এথিক এর নতুন নাটক সুড়ঙ্গ। দলের চতুর্দশ প্রযোজনা হিসাবে এথিক মঞ্চে নিয়ে নিয়ে এলো প্রখ্যাত কথা সাহিত্যিক ও নাট্যকার সৈয়দ ওয়ালীউল্লাহ্’র সুড়ঙ্গ।

ধন-সম্পদের প্রতি মানুষের লোভ চিরকাল। অন্যের সম্পদ নিজের করে নেয়ার প্রবৃত্তি আদীকাল থেকে চলমান। হোক তা বৈধ কি অবৈধ উপায়ে। হোক সে দূরের অথবা কাছের জন। প্রয়োজনে সুড়ঙ্গ খুড়ে সম্পদ ছিনিয়ে নিতেও দ্বিধা করেনা মানুষ। কিন্তু সম্পদ কি সবাইকে সব সময় ধরা দেয়? গুপ্ত ধন কি জোটে সবার ভাগ্যে? এমনই বিষয় ফুটে উঠেছে নাটকে এক ষোড়শী কন্যার কৌতুহলী ভাবনার জগতের ভিতর দিয়ে। নাটকের কাহিনী আবর্তিত রাবেয়াকে ঘিরে। দু’দিন পর তার বিয়ে অথচ সে বিছানায় শয্যা নিয়েছে। ডাক্তার-হেকিম সব হদ্দ হয়ে গেল কিন্ত কেউ তার অসুখ ধরতে পারেনা। মাতৃহারা মেয়ের দুশ্চিন্তায় বাবা রেজ্জাক সরদার অতিশয় উদ্বিগ্ন। মুশকিল আসান হয়ে অবশেষে এলো এক ফকির বাবা যাকে দেখে রাবেয়া অবাক। কিন্তু রহস্য না ভাঙতে রাবেয়া তৎপর। যে রহস্যের রোমাঞ্চে নিজের বিয়ের আয়োজন উপেক্ষা করে অসুস্থতার ভান ধরে ঘরে পড়ে আছে আর দুদিন ধরে শুয়ে শুয়ে শুনছে সুড়ঙ্গ খোড়ার শব্দ। মাটির নিচের অন্ধকারের রহস্য ভেদ করে ধীরে ধীরে তার ঘরে এগিয়ে আসছে এক রহস্য মানব। রোমাঞ্চ আর উত্তেজনায় অবশেষে সকলেই মুখোমুখি হয় এক কঠিন সত্যের।

নাটকটি নির্দেশনা দিয়েছেন মিন্টু সরদার। সহযোগী নির্দেশক মনি কানচন। হল ভর্তি দর্শক নাটকটি মন্ত্র মুগ্ধের মত উপভোগ করেন। নাটক শেষে প্রযোজনাটির ভূয়সী প্রশংসা করেন বরেণ্য নাট্যজন রামেন্দু মজুমদার, আখতারুজ্জামান সহ অনেক গুনী নাট্যজন। নাটকের বিভিন্ন চরিত্রে অভিনয় করেছেন মাহফুজ আফনান অপ্সরা,প্রদীপ কুমার,মনি কানচন,সুকর্ন হাসান, আজিমউদ্দিন, রেজিনা রুনি,নাহিদ মুন্না,উর্মি আহমেদ,দীপান্বিতা রায়,রুবেল খান,মনিরুল হক ঝলক,মিথিলা, রুসানা, নয়ন, লাবিব, দিপেন, মবিয়া, সৃজন প্রমুখ। নাটকটির মঞ্চ পরিকল্পনা করেছেন সাইফুল ইসলাম, আলোক পরিকল্পক ঠাÐু রায়হান,আবহসংগীত করেছেন শিশির রহমান, পোষাক ও রূপসজ্জায় শুভাশীষ দত্ত তন্ময়, কোরিওগ্রাফী করেছেন এম আর ওয়াসেক এবং নাটকের প্রচ্ছদ করেছেন চারুপিন্টু।

আনন্দ আয়োজনে উদযাপিত হলো ডিরেক্টরস গিল্ড বাংলাদেশ এর ২৩তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী

নানা আনন্দ আয়োজনে মধ্য দিয়ে বুধবার (১০ জুলাই ২০২৪) উদযাপিত হয়ে গেল বাংলাদেশের টেলিভিশন মিডিয়াতে কর্মরত পেশাদার নাট্য-পরিচালকদের জাতীয় সংগঠন ডিরেক্টরস গিল্ড বাংলাদেশ এর ২৩তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী। সংগঠনের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর এই মাহেন্দ্রক্ষণে কার্যনির্বাহী কমিটির সদস্যগণ ছাড়াও নির্মাতা, মিডিয়া ব্যাক্তিত্ব ও কলা-কুশলীবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
ডিরেক্টরস গিল্ড বাংলাদেশের নিকেতনস্থ কার্যালয়ে বিকাল ৪টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত নির্ধারিত এই আনন্দ আয়োজনে ছিল আড্ডা, গান, চা-নাস্তা পর্ব ও সেলফি টাইম। প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর কেক কাটা হয় সন্ধা ৭টা ৩০ মিনিটে।
সন্ধ্যায় কেক কাটা পর্ব শেষে ডিরেক্টরস গিল্ড বাংলাদেশকে ফুলেল শুভেচ্ছা জানান মাছরাঙা টেলিভিশনের অনুষ্ঠান প্রধান আরিফ রেহমান, ঢাকা টেলিভিশনের চেয়ারম্যান দ্বিতীয় সৈয়দ হক,চলচ্চিত্র পরিচালক সমিতির পক্ষ থেকে সাধারণ সম্পাদক শাহীন সুমন, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক করিরুল ইসলাম রানা, নাট্যকার সংঘের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আজম খান হেলাল ও সাংগঠনিক সম্পাদক রাজিব মনি দাস, ভিডিও এডিটর এসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ এর সভাপতি মো: শওকত আলী রানা ও সাধারণ সম্পাদক আলী হাসান রুপন, টেলিভিশন ক্যামেরাম্যান অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক নিয়াজ মাহবুব ও সাংগঠনিক সম্পাদক সাহিল রনি, কনফেডারেশনের সভাপতি ও বাংলাদেশ টেলিভিশন মিডিয়া প্রডাকশন ম্যানেজার অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি আবু জাফর অপু ও সাংগঠনিক সম্পাদক দীন ইসলাম দিনার, লাইট ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি মোহাম্মদ সালাম, প্রযোজক ও অভিনেতা নজরুল রাজ সহ বিভিন্ন ব্যক্তি ও সংগঠন।
কেক কাটা পরবর্তী সংক্ষিপ্ত আলোচনা পর্ব সঞ্চালনা করেন ডিরেক্টরস গিল্ড বাংলাদেশের সাধারণ সম্পাদক এস এম কামরুজ্জামান সাগর ও সভাপতিত্ব করেন সংগঠনের সভাপতি অনন্ত হীরা।
বিকাল থেকে শুরু হয়ে রাত অবধি চলা এই আয়োজন নাট্য পরিচালক, আমন্ত্রিত নাট্যকার, সংবাদকর্মী, অভিনয় শিল্পীসহ বাংলদেশের টেলিভিশন চ্যানেল ও ডিজিটাল মিডিয়ার বিশিষ্ট ব্যক্তিবর্গ, স্পন্সর প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা, টিভি চ্যানেলের কর্মকর্তা ও জনপ্রিয় সেলিব্রেটিদের অংশগ্রহণে মিলনমেলায় পরিণত হয়েছিল। গান, নাচ আর আড্ডায় ভরপুর ছিল অনুষ্ঠানস্থল। কফি কর্নারে খেতে খেতে আমন্ত্রিত ব্যক্তিরা নিজেদের মধ্যে আড্ডায় মশগুল ছিলেন। আগত অনেকেই সেলফি কর্নারে গিয়ে একক কিংবা অন্যদেও সঙ্গে সেলফি তোলায় মগ্ন ছিলেন।
সন্ধ্যায় কেক কাটা পর্ব শেষে বিভিন্ন সংগঠন ও ব্যক্তিত্বরা ডিরেক্টরস গিল্ড বাংলাদেশের বর্তমান নেতৃত্বের প্রশংসা করে সংগঠনকে আরো গতিশীল করার অনুরোধ জানান।

১লা বৈশাখ প্রাঙ্গণেমোরের নতুন নাটক টিনের তলোয়ার

মাত্র এক মাসের ব্যবধানে বাংলাদেশের প্রথম সারির নাট্যদল প্রাঙ্গণেমোর আবারও মঞ্চে আনতে যাচ্ছে নতুন নাটক। এবার উৎপল দত্তের লেখা বিখ্যাত নাটক "টিনের তলোয়ার"। নাটকটি নির্দেশনা দিয়েছেন বিশিষ্ট অভিনেতা, নির্দেশক
ও নাট্যকার অনন্ত হিরা। আগামী ১লা বৈশাখ বাংলা নববর্ষের প্রথম দিন বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির পরীক্ষণ থিয়েটার হলে সন্ধ্যা ৭টায় নাটকটির উদ্বোধনী প্রদর্শনী হবে। এছাড়া ২ ও ৩ বৈশাখ পরপর দুই দিন একই হলে নাটকটির
আরও দুটি প্রদশর্নী হবে। ২০ এপ্রিল বাংলাদেশ মহিলা সমিতির ড. নীলিমা ইব্রাহিম মিলনায়তনে সন্ধ্যা ৭টায় নাটকটির আরও একটি প্রদর্শনী হবে এবং একই হলে ১৯ এপ্রিল অনন্ত হিরার লেখা ও নূনা আফরোজের নির্দেশনায় অভিনেতা নাটকের দ্বিতীয় প্রদর্শনী হবে। টিনের তলোয়ারের নাট্যসংক্ষেপ টিনের তলোয়ার থিয়েটারওয়ালা বা নাটকওয়ালাদের অস্ত্র। টিনের তলোয়ার নাটকের ভেতরে নাটক। টিনের তলোয়ার মানুষের মানুষ হয়ে ওঠার প্রয়াস। টিনের তলোয়ার মানুষের শিল্পী হয়ে ওঠার চেষ্টা।
টিনের তলোয়ার থিয়েটারওয়ালাদের এক বহমান লড়াই। টিনের তলোয়ার নাটকে অভিনয় করছেন অনন্ত হিরা, আউয়াল রেজা, সবুক্তগীন শুভ, সীমান্ত আমীন, মশিউর রহমান, সুজয় গুপ্ত, শিশির চৌধুরী, মোফাজ্জল, বাঁধন সরকার, সাহেদ সরদার, গুলশান বহ্নি, তমা হোসেন, ফাহিম মুনতাসীর, নাজিম আহমেদ ত্বকি, জহিরুল ইসলাম ও তন্নী ইসলাম। টিনের তলোয়ার' নাটকটির মঞ্চ ডিজাইন করেছেন ফয়েজ জহির, আলো ঠাণ্ডু রায়হান, সঙ্গীত শিশির রহমান, পোশাক নূনা আফরোজ ও পোস্টার চারু পিন্টু।

এনএসডি আয়োজিত ‘২৩তম ভারত রঙ মহোৎসব ২০২৪’ এ অংশগ্রহণের পূর্বে ঢাকার উৎসবের প্রথম নাটক অ্যানা ফ্রাঙ্ক, আগামী ১ ফেব্রুয়ারি, বৃহস্পতিবার, সন্ধ্যা ৭টায়, শিল্পকলা একাডেমি এক্সপেরিমেন্টাল থিয়েটার হলে

ভারত সরকারের পৃষ্ঠপোষকতায় ন্যাশন্যাল স্কুল অব ড্রামা আয়োজিত ‘২৩তম ভারত রঙ মহোৎসব ২০২৪’ এ অংশগ্রহণের জন্য বাংলাদশে থেকে পাঁচটি দল আমন্ত্রিত হয়েছে, দলগুলো হলো: ম্যাড থেটার (অ্যানা ফ্রাঙ্ক), থিয়েটার ফ্যাক্টরি (আষাঢ়স্য প্রথম দিবসে), নাট্যম রিপার্টরি (দমের মাদার), বটতলা (খনা) ও স্বপ্নদল (চিত্রঙ্গদা)।

বাংলাদেশের দলগুলো আন্তর্জাতিকভাবে সমাদৃত এই উৎসবে অংশগ্রহণের পূর্বে আগামী ১ থেকে ৫ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির সহযোগিতায় ৫ দিনব্যাপী একটি নাট্যোৎসবের আয়োজন করা হয়েছে যার শিরোনাম ‘ভাষার সঙ্গ, নাট্যরঙ্গ বাংলাদেশ উৎসব। আগামী ১ ফেব্রুয়ারি বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির এক্সপেরিমেন্টাল থিয়েটার হলে, সন্ধা ৭টায় নাট্যোৎসবের উদ্বোধনী দিনে মঞ্চায়িত হবে ম্যাড থেটারের নাটক ‘অ্যানা ফ্রাঙ্ক’। উৎসবের উদ্বোধন করবেন বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির মহাপরিচালক ঋত্বিক নাট্য প্রাণ লিয়াকত আলী লাকী। উল্লেখ্য যে ‘২৩তম ভারত রঙ মহোৎসব ২০২৪’ এ নাটকটির দুটি প্রদর্শনী হবে আসামের দিব্রুগড় ও এলটিজি অডিটোরিয়াম, দিল্লি।

দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ চলাকালীন আত্মরক্ষার জন্য অ্যানা ফ্রাঙ্ক ও তার পরিবার আশ্রয় নেয় একটি গোপন কুঠুরি সিক্রেট অ্যানেক্সে, যেখানে তারা ৭৬১ দিন অতিবাহিত করার পর ধরা পড়ে হিটলারের গেস্টাপো বাহিনীর হাতে। সিক্রেট অ্যানেক্সের বন্দি জীবনের রুদ্ধশ্বাস দিনগুলোতে অ্যানা ফ্রাঙ্ক তার ডায়েরিতে ফুটিয়ে তোলে যুদ্ধের বারুদমাখা ধূসরতা, তাঁর মানসিক বেদনার রঙ, ব্যক্তিগত স্বপ্ন ও সম্ভাবনার রংধনু।

নাটকটির প্লেরাইট আসাদুল ইসলাম ও ডিরেকশন কাজী আনিসুল হক বরুণ। ঐতিহাসিক চরিত্র অ্যানা ফ্রাঙ্ককে নিয়ে নির্মিত ম্যাড থেটারের প্রযোজনাটি একক নাটক হিসাবে ইতিহাসে প্রথমবার বাংলাদেশে মঞ্চস্থ হতে যাচ্ছে। ‘অ্যানা ফ্রাঙ্ক’ নাটকটি আর্য মেঘদূতের একক অভিনয়। মূলধারার বাংলা নাটকে আর্য মেঘদূত সর্বকনিষ্ঠ একক অভিনেত্রী হিসাবে আবির্ভূত হয়েছেন।